spot_img

চট্টগ্রাম বন্দরের আয় বদলে দেবে দেশের অর্থনীতি।

Must read

গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নাম চট্টগ্রাম বন্দর,যে বন্দরকে ঘিরে বাড়ছে নানা সুযোগ-সুবিধা এবং সেবা প্রদানের হার। এই চট্টগ্রাম বন্দরের আয় দিয়ে সমাধান করা যাবে বাংলাদেশের সব অর্থনৈতিক সমস্যা। 

আগামী পরিকল্পনায় বন্দরকে যেভাবে ঠেলে সাজানো হচ্ছে এর মাধ্যমে বলা সহজেই যে এখানকার আয় দিয়ে সমাধান করা যাবে বাংলাদেশের সমস্যা গুলো।

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে সম্প্রতি এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছেন বন্দরের চেয়ারম্যান।

চট্টগ্রাম বন্দরকে বলা হয় বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাণিজ্যের প্রধান এক গেটওয়ে এবং এই বন্দর দিয়ে প্রতি বছর রচিত হয় জিডিপি অর্জনের নতুন নতুন রেকর্ড।তারই ধারাবাহিকতায়  দেশি রপ্তানিকে চাঙ্গা করা এবং বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ ভেড়ানোর জন্য প্রধান এক মাইল ফলক হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বন্দরনগরী। 

সিঙ্গাপুর পোর্ট যেমন পাল্টে দিয়েছে তেমনি আগামী ৩ থেকে ৫ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশের যত সমস্যা আছে সব সমস্যার সমাধান করা যাবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

যেখানে বৈদেশিক মুদ্রা,রিজার্ভ, এবং জিডিপির ঊর্ধ্বগতি সবই এই বন্দর এর আয়ের মাধ্যমে করা যাবে।চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ছে দ্বিগুণ হারে ফলে আয়ও বাড়ছে।

গত ২২শে আগস্ট সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের সময় এই তথ্যটি জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

এক সময় চট্টগ্রাম বন্দর ছিল খুব ছোট।এটি সীমাবদ্ধ ছিল সদরঘাট এলাকা এবং কর্ণফুলীর ভিতর পর্যন্ত। তবে সময়ের সাথে সাথে বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্ধরের পরিধি। এটি বিস্তৃত হয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালী পর্যন্ত। এই কারণে দায়িত্ব ও বেড়েছে অনেক এবং পতেঙ্গায় বাস্তবায়িত হচ্ছে ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টার্মিনাল।

বলা যায় পূর্ববর্তী ১০ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর যে অবস্থান ছিল বর্তমানে তার চেয়ে অনেক গুণ বেড়েছে এবং আগে যেখানে ম্যানুয়ালি কাজ করা হতো এখন সেখানে ডিজিটালি কাজ হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশের যে স্মার্ট বন্দর নগরী দরকার সেই স্মার্ট বন্দর নগরীর গড়ার পথে অনেকটা এগিয়ে আছি বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। 

আরো জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আগের থেকে এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বে হাজার হাজার বন্দরের মধ্যে প্রথম ১০০টি বন্দরের মধ্যে ৬৭ তম অবস্থান এখন চট্টগ্রাম বন্দর নগরীর। অথচ বিগত ২০০৯ সালে এর অবস্থান ছিল ৯৮ তম। 

চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের মোট বাণিজ্যের ৯৯% কনটেন্ট জাত পণ্যের ৯৮% পরিবাহিত হয়ে থাকে বলেও জানা গেছে। বর্তমানে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের সিংহভাগ সামাল দিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। 

১৯৭৬ সালে এই বন্দর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নামে যাত্রা শুরু করা এই চট্টগ্রাম বন্দর এখন বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রধান গেটওয়ে এর কাজ করে চলছে।বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রায় ৯২ শতাংশ পণ্য পরিবাহিত হয় এ বন্দর এর মাধ্যমে। 

এছাড়াও এর কারণে গত জুন মাসে ৬০ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে বাংলাদেশের যার ৮৪ শতাংশ হয়েছিল তৈরিকৃত পোশাক। বন্দরের সামর্থের কথা উল্লেখ করে চেয়ারম্যান এর দাবি বর্তমানে ক্ষেত্রবিশেষে প্রদান করা হচ্ছে অনারাইভাল বার্থিংও এবং গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং হয়েছে মোট ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৩৪ টি,জেনারেল কার্গো উঠানামা হয়েছে ১৩ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৩ টন এবং জাহাজ হ্যান্ডেলিং হয়েছে ৪ হাজার ২৫৩ টি।

ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ হ্যান্ডবিলিং মোকাবেলায় সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে শুরু করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং তারা আরো জানান কর্ণফুলী চ্যানেলের ৩২১ কোটি টাকা ব্যয় এ প্রকল্পের আওতায় ৫১ লাখ ঘন মিটার পলি ও বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এর কারণে গতি পেয়েছে জাহাজ চলাচল যার ফলে ধীরে ধীরে আয় পেয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরনগরী। 

বিগত ২০২১-২২ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরনগরী আয় করেছে ৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা যা আগের বছরে তুলনায় ৫১৫ কোটি টাকা বেশি।আগের বছর অর্থাৎ ২০২০-২১ সালে এর আয় ছিল ৩ হাজার ৭০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। 

অন্যদিকে ভ্যাট,  কর, উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়,কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা, হোল্ডিং ট্যাক্স ইত্যাদি বাদ দিয়ে ২০২১-২২ সালের বন্দরের নিট আয় দাঁড়ায় এক হাজার ৭৫ কোটি টাকা।যেখানে এর আগের বছর পরিমাণ ছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের যে গত বছরের নিট আয় এর পরিমান ৩৭৭ কোটি টাকা।

বন্দরের আয়ের উৎস গুলো হল বার্থ, জেটি ভাড়া,কি গ্যারান্টি ক্রেন বা কিউসিজি চার্জ, ক্রেন চার্জ, পোর্ট ডিউস, টেগবোর্ড ভাড়া,পাইটিং ফি, জাহাজে পানি সরবরাহ এবং কার্গো ল্যান্ডিং, শিপিং চার্জ, রিমুভাল চার্জ, স্টোরেজ চার্জ, টার্মিনাল চার্জ, ইলেকট্রিক চার্জ, স্টাফিং আনস্টাফিং চার্জ, এফটিআর খাতে আয়, বন্দরের জায়গা এবং স্থাপনা ভাড়া ইত্যাদি নানা খাতে আয় করে চলছে। 

আগামীতে যেহেতু চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিস্তৃত হচ্ছে পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর তখনই চট্টগ্রাম বন্দর সত্যিকার অর্থেই স্বপ্ন দেখায় নতুন এক বাংলাদেশের যার ছয় বদলে যাবে দেশের রাজস্ব আয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভাল।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article