ছোট হোক বড় হোক সব ব্যবসার ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ এবং মূলধনের গুরুত্ব রয়েছে।
অধিকাংশ মানুষ যা মনে করে ব্যবসা শুরুর জন্য পরিমাণে বেশি অর্থ লাগবে। তবে খুব কম টাকা দিয়েও একটি ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। উদ্যোক্তারা নতুন ব্যবসা শুরু করার আগে,তাদের সাধারণত সঠিক পরিমাণে অর্থ সুরক্ষিত করে থাকে।
বর্তমানে অনেকেই স্বল্প পুঁজি নিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা করতে আগ্রহী। তবে স্বল্প পুঁজিতে ইনভেস্টর্স বা বিনিয়োগ কারী খুঁজে পাওয়া দুর্লভ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এই আর্টিকেলটিতে আমরা ক্ষুদ্র বা ছোট ব্যবসার জন্য বিনিয়োগকারি পাওয়ার পাঁচটি সহজ উপায় জানাবো।
৫ টি সহজ উপায় গুলো হলো
১.বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবার।
২.ক্ষুদ্র ব্যবসার ঋণ।
৩.এনজেল ইনভেস্টর।
৪.কর্মক্ষেত্রের সংযোগ।
৫.ভেঞ্চার ক্যাপিটাল।
১.বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবার।
ব্যবসার ক্ষেত্রে অর্থের জন্য বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের থেকে ঋণ নেওয়া যেতে পারে এবং পরবর্তীতে ব্যবসা লাভজনক হলে সেই অর্থ ফেরত দেওয়া সম্ভব। ব্যবসার কাজে পরিবার অথবা বন্ধুবান্ধব এর থেকে অর্থ ঋণ নেওয়ার ব্যাপারটি আনঅফিসিয়াল অর্থাৎ অনানুষ্ঠানিক। এই ক্ষেত্রে লেনদেনের এবং টাকা পরিশোধ করার ব্যাপারটি নিজেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। মূলধনের পরিমাণ এবং পরিশোধর কোন নির্ধারিত সময় নাও থাকতে পারে।
তবে পরিবার এবং বন্ধুর থেকে অর্থ সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বের ঝুঁকির সম্মুখীন ও হওয়া সম্ভব। ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক মিশ্রিত করার খারাপ দিকও আছে। এটি শুধুমাত্র একটি আর্থিক ঝুঁকি নয়। কারণ ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে এবং ব্যবসায় ক্ষেত্রে সংমিশ্রণ ঘটলে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
২.ক্ষুদ্র ব্যবসার ঋণ :
ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী এনজিওগুলো বা আঞ্চলিক সংখ্যাগুলো ব্যবসা বা উদ্যোগে ঋণ দিলে তার কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকে না। এক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকার বেশি কোনো ঋণ বিতরণ করা হলে ‘ক্ষুদ্র ব্যবসা ঋণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত এনজিও, যেমন গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, আশা ইত্যাদি ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পের জন্য ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের আওতায় ঋণ প্রদান করে থাকে। তারা মূলত তৃণমূল পর্যায়ে এমন উদ্যোক্তাদের খুঁজে বের করে, যাঁদের জন্য ক্ষুদ্রঋণই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ট্রেড লাইসেন্স এবং তথ্য-উপাত্ত ব্যাংকে প্রদানের মাধ্যমে স্টার্ট-আপ ঋণের জন্য আবেদন করা সম্ভব। বর্তমানে উদ্যোক্তাদের রবির ফ্লাগশিপ ডিজিটাল প্লাটফর্ম হলো ‘আর ভ্যঞ্চার্স’।
৩.অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর।
অ্যাঞ্জেল ফান্ডিং বা অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর হলো ধনী ব্যক্তিগন যারা পেশাদার বিনিয়োগকারী হিসাবে তাদের নিজস্ব অর্থ বিনিয়োগ করে এবং সাধারণত ব্যবসার প্রাথমিক পর্যায়ে বিনিয়োগের সুযোগ সন্ধান করে থাকে। এরা সাধারণত তাদের বিনিয়োগে একটি ভাল মূলধনের সম্ভাবনার খোঁজ করেন।
ব্যবসায় আপনি যদি একজন অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর বা বিনিয়োগকারী পান তবে তারা আপনার ব্যবসায় যথেষ্ট অবদান রাখতে পারে এবং নিশ্চিত করে যাতে অন্য কোনও বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজন না হয়।
তবে যেকোন অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর বা বিনিয়োগকারী একটি ব্যবসার নিয়মিত নজরদারি এবং প্রতিদিনের উন্নয়ন পর্যবেক্ষন করে থাকেন। যার ফলে আপনি আপনার ব্যবসায় কাজ করার জন্য শুধু বিনিয়োগকারি নয় পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ পাবেন।
অ্যাঞ্জেল ক্যাপিটাল অ্যাসোসিয়েশন,
অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টমেন্ট নেটওয়ার্ক, এর মাধ্যমে মূলত বিনিয়োগকারি পাওয়া যায়। যেখানে এক জায়গায় 300,000 এর বেশি সম্ভাব্য বিনিয়োগকারী বিনিয়োগের অপেক্ষায় থাকে।
৪.কর্মক্ষেত্রের সংযোগ।
আপনার কর্মক্ষেত্রে বা কর্মসংস্থানে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারি পাওয়া যেতে পারে। সেটা হতে পারে আপনার সহকর্মী বা বা কর্মক্ষেত্রে পরিচিত কেউ। কন্টাই কর্মক্ষেত্রে নেটওয়ার্কিং করে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নেটওয়ার্কিং করা থাকবে আপনি খুব সহজেই আপনার ব্যবসার জন্য আগ্রহী বিনিয়োগকারীখুঁজে পেতে পারেন।
৫.ভেঞ্চার ক্যাপিটাল।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল মূলত ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম থেকে আসে। সাধারণত সীমিত অংশীদাররা এই কোম্পানিগুলিতে বিনিয়োগ করে থাকে এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম নিজেই সাবধানে নির্বাচিত ছোট ব্যবসায় বিনিয়োগ করে। তারা তাদের বিনিয়োগের বিনিময়ে ইক্যুইটি এবং ব্যবসার দিক নির্দেশ করে।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থাগুলি বিশাল, দ্রুত বৃদ্ধির সম্ভাবনা সহ ব্যবসাগুলিতে ইক্যুইটি বিনিয়োগ করে থাকে। এই ক্যাপিটালিস্টদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল আপনার ব্যবসাকে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেখানে এটি একটি বড় কর্পোরেশন দ্বারা কেনা বা জনসাধারণের কাছে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট বড় হয়।
বর্তমানে ছোট ব্যবসার বিনিয়োগের জন্য ইনভেস্টর্স বা বিনিয়োগকারী খোঁজা কঠিন কিছু নয়। উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে চেষ্টা করলে খুব সহজে বিনিয়োগকারী পাওয়া যাবে।