লেখকঃ নুজহাত জাহান নিহান
গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো অনারের এআই-চালিত স্মার্টফোন কারখানার। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ কোম্পানিটির নতুন উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে যুক্ত হলো, যা চীনের পাঁচটি অঞ্চল ও ইন্দোনেশিয়ার পর অনারের সামগ্রিক গ্লোবাল ম্যানুফ্যাকচারিং নেটওয়ার্ককে আরও বিস্তৃত করল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, অনারের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং স্মার্ট টেকনোলজিসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, এ উদ্যোগ স্থানীয়ভাবে ডিভাইস উৎপাদনের পাশাপাশি প্রযুক্তি দক্ষতা ও কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরি করবে।
শুরুর পর্যায়ে কারখানায় প্রতিদিন ১,৫০০ ইউনিট স্মার্টফোন উৎপাদন করা হবে। আগামী এক বছরের মধ্যে আরও চারটি লাইন যুক্ত হলে উৎপাদন সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে জানানো হয়। শুরু থেকেই সংযোজিত ডিভাইসগুলো ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ লেবেল নিয়ে দেশের বাজারে আসবে।
অনার জানিয়েছে, উৎপাদন প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোতে এআই-চালিত অটোমেশন ব্যবহারের ফলে উৎপাদনের মান, নির্ভুলতা ও দক্ষতা নিশ্চিত হবে। স্থানীয় উৎপাদন শুরু হওয়ায় ডিভাইসের দাম কমবে, পাশাপাশি ভবিষ্যতে রপ্তানির সুযোগও তৈরি হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বক্তারা বলেন, নীতিগত সংস্কার, অবৈধ আমদানি দমন এবং স্মার্টফোন বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়াতে সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাদের মতে, সঠিক প্রণোদনা অব্যাহত থাকলে দেশে স্মার্টফোন ব্যবহারের হার ৪০ শতাংশ থেকে ভবিষ্যতে ৭০–৮০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
অনারের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের নেতৃত্ব বলেন, এ কারখানা শুধু উৎপাদন নয়, বরং দেশীয় দক্ষ জনবল গড়ে ওঠা এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন শুরু হওয়ায় ক্রমবর্ধমান চাহিদা সাশ্রয়ী মূল্যে পূরণ করা সম্ভব হবে।
২০২৩ সালের শেষে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করার পর দ্রুতই স্মার্টফোন বাজারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছে অনার। বর্তমানে ব্র্যান্ডটির বাজার হিস্যা প্রায় ৩ শতাংশ, যা আগামী বছরে ১০ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উৎপাদন উদ্যোগটি দেশের আমদানি নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি বৈশ্বিক ইলেকট্রনিকস সাপ্লাই চেইনে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।




