ইউটিউব হলো পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ সার্চইঞ্জিন এবং ভিডিওর ক্ষেএে সর্ববৃহৎ সার্চইঞ্জিন। ২০০৫ সালে ইউটিউব চালু হওয়ার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।
আমরা ইউটিউব SEO জানার আগে সর্বপ্রথম জেনে আসি এই SEO টা কি? SEO এর পূর্ণরুপ হলো search engine optimization। এর প্রধান কাজ হলো আপনার যে কোনো ফাইল, কনটেন্ট বা ভিডিও গুলোকে সার্চইঞ্জিন গুলোতে উপরের দিকে দেখানো বা প্রথম ১০ এর ভিতরে দেখানো। গুগল এবং ইউটিউব হলো আমাদের অতি পরিচিত সার্চইঞ্জিন।
SEO ইউটিউবে কি কাজে লাগে?
বাংলাদেশে ইউটিউবের জনপ্রিয়তা যেভাবে দিনকে দিন বাড়ছে, এতে করে অনেকের জন্য এটি অর্থ আয় করার মাধ্যম হয়ে উঠছে। ইউটিউব থেকে আয় হয় ভিডিও কনটেন্টের মাধ্যমে। আর এই ভিডিওগুলো পাবলিষ্ট করার জন্য SEO এর ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেলের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তবে আমি একটা ব্যাপারে নিশ্চিত যে, যারা SEO এর সঠিক ব্যবহার জানেনা বা ব্যবহার না করে ভিডিও পাবলিষ্ট করছে তারা যথেষ্ট পরিমান ভিজিটর পাচ্ছে না বা একদমই ভিজিটর পাচ্ছে না। এইবার আমরা Youtube এ SEO এর কাজ গুলো স্টেপ বাই স্টেপ দেখব।
১. সঠিক টপিক নিবার্চন
ইউটিউবে ভিডিও বানানোর ক্ষেত্রে সঠিক টপিক ঠিক করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি এমন একটা টপিক নিয়ে ভিডিও বানান যা ভিজিটর রা খুব কম সার্চ করে, তাহলে তো ভিডিও তৈরি করে কোনো লাভ হবে না। আমরা ভিডিওর জন্য সঠিক টপিক বা ভিজিটর রা কোন কিওয়ার্ড ইউটিউব এ সবচেয়ে বেশি সার্চ করে তা tools ব্যবহারের মাধ্যমে জানতে পারি। এর মধ্যে আমরা “keyword everywhere extension” এইটা ব্যবহার করতে পারি। সঠিক নিবার্চের পাশাপাশি ভিডিওর মান এর দিকে আমাদের অবশ্যই নজর রাখতে হবে। ভালো মান বা quality সম্পন্ন ভিডিওগুলোর rank এ উপরে থাকার সম্ভবনা খুব বেশি থাকে। আরো পড়ুন: ডিজিটাল মার্কেটিং A to Z
২. সঠিক কিওয়ার্ড নিবার্চন
সঠিক কিওয়ার্ড নিবার্চন আপনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে মূখ্য ভূমিকা পালন করে। এই সঠিক কিওয়ার্ডটি পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই অনেক রিসার্চ করতে হবে। আপনি নিজের মাথা কাটিয়ে এই রিসার্চ করতে পারেন। যখন আপনার মাথা কাজ করবে না তখন আপনি বিভিন্ন tools এর মাধ্যমে এই সঠিক কিওয়ার্ডটি খুজতে পারেন। ইউটিউবে SEO করার জন্য বেশিরভাগ ইউটিউবার রা Tubebuddy এই টুলটা ব্যবহার করে। তাছাড়া ইনস্টেন্ট গুগল রিসার্চ করে বা গুগল সাজেষ্টেট থেকেও আপনারা কিওয়ার্ড খুজে নিতে পারেন। চার বা তার থেকে বেশি ওয়ার্ডের কিওয়ার্ডকে long tail কিওয়ার্ড বলে। একটা ভিডিওর জন্য কিওয়ার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব সময় long tail কিওয়ার্ড ব্যবহার করাই ভালো।
৩. সঠিক টাইটেল ব্যবহার
কিওয়ার্ডের মতো সঠিক টাইটেল ব্যবহার করাটাও ইউটিউব SEO এর জন্য খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ। টাইটেলের কাজ হলো আপনার ভিডিওটিকে ভালো rank পেতে সাহায্য করা। তাই ভিডিওর টাইটেলে যতটুকু সম্ভব ইন্টারেস্টিং কথা লেখটাই ভালো। কারন একজন ভিজিটর টাইটেলটা দেখেই ভিডিওতে ক্লিক করার প্রতি আগ্রহী হয়। আমাদের এই বিষয়টা অবশ্যই স্মরন রাখতে হবে যে, ইউটিউব ভিডিওতে টাইটেল দেওয়ার সময় কিওয়ার্ডটি যেন টাইটেলের প্রথমে থাকে বা প্রথম ১৫০ শব্দের ভিতর রাখা যায়। ভিডিওর কিওয়ার্ডের সাথে অবশ্যই টাইটেলের মিল থাকতে হবে। আরো পড়ুন : ৩০ হাজার টাকায় ব্যবসার ৫টি আইডিয়া
৪. সঠিক thumbnail ব্যবহার
সঠিক thumbnail ব্যবহার করা ইউটিউব SEO এর জন্য খুব জরুরি। কারন আপনার thumbnail থেকে ভিজিটর রা বুঝতে পারবে আপনি ভিডিওটি কি নিয়ে তৈরি করেছেন বা ভিডিওটির মূল বিষয়বস্তু কি। তাছাড়া একজন ভিজিটর thumbnail এবং টাইটেল দেখেই আপনার ভিডিওর উপর ক্লিক করে। একটা ভিডিওর কতটুকু quality আছে সেটা পরের ব্যাপার আগে তো ভিজিটরদের আপনার ভিডিওর উপর ক্লিক করতে হবে। সুন্দর একটি thumbnail ভিজিটরদের ভিডিওতে ক্লিক করতে আগ্রহী করবে। তাই সব সময় চেষ্টা করতে হবে যাতে thumbnail টা সঠিক করে হয়, তাতে প্রয়োজনে বেশি সময় দিতে হবে। কারন thumbnail সঠিক না হলে ভিজিটর রা আপনার ভিডিওর উপর ক্লিকই করবে না, ফলে আপনার ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।
৫. সঠিক ট্যাগ ব্যবহার
আপনার ভালো ট্যাগগুলোর মাধ্যমে আপনি ইউটিউবকে বলতে পারবেন আপনার ভিডিও টি কোন টপিকের উপর। তাছাড়া সঠিক ট্যাগ নিবার্চন করাটাও গুরুত্বপূর্ণ কারন, আপনি আপনার ভিডিওতে যে ট্যাগগুলো দিবেন সেগুলো যদি ভিজিটর রা খুজে না পায় তবে তারা আপনার ভিডিওটি পাবে না। আপনি যেই কিওয়ার্ডটি প্রথমে ব্যবহার করেছিলেন এইটিকে অবশ্যই আপনার ট্যাগগুলোর মধ্যে রাখতে হবে। একটি ভিডিওতে অনেকগুলো ট্যাগ দেওয়া যায়, তবে কিওয়ার্ডকে প্রথম ট্যাগ রেখে খুব বেশি হলে দুই-তিনটি ট্যাগ রাখাই ভালো। এখনো কিছু কিছু মানুষরা বিশ্বাস করে যে, ভালো জনপ্রিয় কিছু ট্যাগ ব্যবহার করলেই তার ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে যাবে। আসলে এই কথাটা অনেকটাই মিথ্যা, তবে এই জনপ্রিয় ট্যাগগুলোর কিছু প্রভাব আছে, কিন্তু সেটার পরিমান খুবই কম।
৬. উপযুক্ত ডেসক্রিপশন ব্যবহার
ইউটিউবে আপনি যে ভিডিও টি দিয়েছেন সেটার টপিক কি? এই প্রশ্নের সঠিক উওরটি পাওয়ার জন্য ভিজিটর রা অবশ্যই আপনার ভিডিওর ডেসক্রিপশন পড়বে। ভিডিওর ডেসক্রিপশন পড়লেই বিস্তারিত ভাবে বুঝা যায় ভিডিওটি টপিক কি। ভিডিওর rank উপরে আনার ক্ষেত্রে একটি গুছানো ডেসক্রিপশন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটা ভিডিওর ডেসক্রিপশনে ১৫০ এর বেশি শব্দ হওয়া উচিত এবং এই ১৫০ শব্দের মধ্যে প্রথম বা দ্বিতীয় লাইনেই ভিডিওর টাইটেলটা ব্যবহার করা ভালো। ডেসক্রিপশন সঠিক থাকলে ইউটিউব সহজে বুঝতে পারবে আপনার ভিডিওটির বিষয়বস্তু কি এবং কেউ যদি আনুষাঙ্গিক কিছু সার্চ করে তবে ইউটিউব আপনার ভিডিওটিকে উপরের দিকে দেখাবে।
এই ৬ টি কাজ ছাড়াও ইউটিউব SEO এর আর দুটি ছোট্ট কাজ আছে। আপনার ভিডিওটি আপলোড করার আগে অবশ্যই ভিডিওর file name change করে নিবেন। আর ভিডিওগুলো যতটুকু সম্ভব লম্বা এবং ডিটেল্সে করার চেষ্টা করবেন।
শেষ কথা
ইউটিউব এর ভিডিও গুলোতে SEO (search engine optimization) করাটা অনেক সোজা। আমার উল্লেখ করা ধাপগুলো যদি আপনার ভিডিওতে প্রযোগ করেন ই