বর্তমান যুগে সব ধরনের কাজের পাশাপাশি প্রচার প্রচারনার জন্য ব্যবহার হচ্ছে ইন্টারনেট এবং এই ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণার কাজকে এক কথায় ডিজিটাল মার্কেটিং বলা হয়। এখন ডিজিটাল মার্কেটিং কে কাজে লাগিয়ে অল্প সময় ব্যবসা-বাণিজ্যে ব্যাপক সফলতার পাওয়া সম্ভব হচ্ছে এবং এর প্রয়োজনীয়তাও ব্যাপক।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা।
বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বর্তমানে পৃথিবীর ৭৫% মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং এই প্ল্যাটফর্ম গুলো নিয়মিত ব্যবহার করে থাকে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য কেনাবেচা থেকে শুরু করে প্রচার-প্রচারণার কাজ পর্যন্ত করা সম্ভব। ডিজিটাল মার্কেটিং কাজ হল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের কাছে পণ্য বা প্রতিষ্ঠানের বা ব্র্যান্ডের সাথে পরিচিতি পাওয়া এবং ব্যবসার মাধ্যমকে সমৃদ্ধ করা। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্য হলো অনলাইন বিজনেস প্রেজেন্টস। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ ইন্টারনেটে পণ্য কেনাবেচার সময় আগে ওই পণ্য সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নেয়। তাই ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেশ গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
একজন ব্যবসায়ী, ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে নিজের ব্যবসাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।এই আর্টিকেলে বর্তমান যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তাগুলো দেয়া হল।
- পন্য কেনা বেচায়:
ডিজিটাল মার্কেটিং এর কৌশল ব্যবহার করে এবং গ্রাহকের অনলাইন উপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসার খুব তাড়াতাড়ি প্রচার সম্ভব। এর কম সময়ের মধ্যেই ব্যবসার বিষয়ে অধিক লোকেরা জেনে নিতে পারেন এবং পণ্য সম্পর্কে আগ্রহ দেখান। অনলাইনে পণ্য কেনা বেচার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ক্রেতা খুব সহজেই পন্য সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে এবং তার পছন্দের পণ্যটি ক্রয় করতে আগ্রহ প্রকাশ করে।
- পরিচিতি লাভ:
ডিজিটাল মার্কেটিং মানে অনলাইনে পন্য, প্রতিষ্ঠানের বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রচার করাকেই বুঝায়। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া যেমন, টিভি, রেডিও ইত্যাদির মাধ্যমে পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করাটাও ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে যে কোন পণ্য বা প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে গ্রাহকদের খুব সহজেই ধারণা দেওয়া যেতে পারে। ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পরিচিতি লাভের জন্য এটি একটি অন্যতম প্রচার মাধ্যম।
- সহজ ও সুবিধাজনক প্রচার মাধ্যম :
ডিজিটাল মার্কেটিং এর পদ্ধতি ট্রেডিশনাল মার্কেটিংয়ের থেকে তুলনামূলক সহজ ও সুবিধাজনক। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব কম সময়েই পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে ব্যবসার কাজের প্রচার-প্রচারণা করা হয়ে থাকে।
- ব্র্যান্ডিং করা:অনলাইন মার্কেটিং বা ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্র্যান্ডিং তৈরি করা।ব্যবসার কাজে ব্র্যান্ডিং বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাক। ডিজিটাল মার্কেটিংকে হাতিয়ার করে খুব সহজেই একটা ব্র্যান্ডিং করা সম্ভব।
- গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক তৈরি: বর্তমানে বিশ্বের ৭০ শতাংশ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনলাইনে কেনাকাটা বা অনলাইনে পণ্য কিনতে আগ্রহী থাকেন।ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সাথে গ্রাহকদের সম্পর্ক তৈরি হয় এবং একটি দারুন যোগাযোগ এর মাধ্যম তৈরী করে দেন।এর ফলে খুব সহজেই দর্শক বা সম্ভাব্য ক্রেতাদের প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দিতে পারা যায়।
- কম খরচে মার্কেটিং: ট্রেডিশনাল রমার্কেটিং এর তুলনায় ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে খরচ অনেকটাই কম হয়। ইন্টারনেটের পরিধি অনেক বেশি হওয়ায় ব্যবসার প্রচার অনেক ক্ষেত্রেই অনেকটা বেশি হয় এবং তুলনামূলক অনেক কম খরচেই অনলাইন মার্কেটিং অধিক বেশি পরিমাণ ক্রেতা দিয়ে থাকতে সক্ষম।
গুগল এ্যডস
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটিং প্লাটফর্ম হচ্ছে গুগল এ্যাডস এর মার্কেটিং পরিসেবা। বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ এই বহুল ব্যবহৃত প্লাটফর্মটি ব্যবহার করে তাদের ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং করছে এবং ছোট বড় প্রায় সকল কোম্পানী এখন ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য প্রথম সারিতে গুগল এ্যডসকে রাখে।গুগল এ্যডস এর বড় সুবিধা হচ্ছে যে কোন ধরণের ব্যবসার জন্য মার্কেটিং করার সুবিধা পাওয়া সম্ভব।
ই-কমার্স, সেলস, লিডস, ওয়েবসাইট ভিজিটর, প্রোডাক্ট এবং ব্রান্ড, অ্যাপ মার্কেটিং এবং স্থানীয় ব্যবসা ইত্যাদি সব ধরণের মার্কেটিং করার জন্য বিজ্ঞাপন বা ক্যাম্পেইন তৈরি করে প্রচারণা করতে গুগল এ্যডস ব্যবহৃত হয়।
গুগল এ্যডস ব্যবহার করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট যেমন প্রথম আলো, যুগান্তর ইত্যাদি ব্লগ সাইডে এ্যডস রান করা সম্ভব। এছাড়াও ইউটিউব, ইমেইলে এ্যাডস এড করা হয় গুগল এ্যডস এর মাধ্যমে।
ইমেইল মার্কেটিং:
ইমেইল মার্কেটিংয়ের মূল উদ্দেশ্য ইমেইলের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা, গ্রাহকের নিকট তুলে ধরা। ইমেইল মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এই ডিজিটাল মার্কেটিং উন্নত হবার সাথে সাথে ইমেইল মার্কেটিংয়ের গুরুত্ব ও চাহিদা দিনে দিনে বেড়েই চলছে। তাই বলা যেতা ইমেইল মার্কেটার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে এখানে সফল হবার মতো যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ইমেইল মার্কেটিংয়ের চাহিদা দিনে দিনে আরও বেড়ে চলেছে। ফলে ইমেইল মার্কেটিং এ সঠিক দক্ষতা অর্জন করলে ভালো পরিমাণ আয় করা সম্ভব।
ফেসবুক মার্কেটিং:
সোশ্যাল মিডিয়া গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় মাধ্যমগুলির একটি হচ্ছে ফেসবুক। ফেসবুককে বর্তমানে সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়ে থাকলেও সময়ের পরিবর্তনে এটি এখন একটি বড় মার্কেটপ্লেস। ফেসবুক মার্কেটিং ব্যবহার করে প্রতি মাসে একটি বিশালঙ্কের আয় করা সম্ভব হচ্ছে। পণ্য বা সার্ভিসকে গ্রাহকের কাছে তুলে ধরা এবং পন্য কেনাবেচা করার জন্য মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে ফেসবুক। তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অন্যতম অংশ হচ্ছে ফেসবুক মার্কেটিং।
জনপ্রিয়
এসইও (SEO)
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে ওয়েবসাইট ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারকারীদের খোঁজকৃত ফলাফলের তালিকা প্রথমদিকে দেখানোর চেষ্টা করা।অর্থাৎ
যেকোন ওয়েব পেজ শত শত কিওয়ার্ডের জন্যে সার্চ ইঞ্জিনে জায়গা নিয়ে থাকে যাকে আমরা ইংরেজিতে RANK বলে থাকি।
এবং এটি ওয়েবসাইট কে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজের প্রথম সারিতে নিয়ে আসার দক্ষতা বা কৌশল। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি ওয়েবসাইটকে সকলের কাছে সহজে পৌছে দেওয়া পাশাপাশি এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা এবং সাইটের ভিজিটর বা ট্রাফিক বৃদ্ধি করা।
বর্তমান সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মার্কেটিং ছাড়া প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব। অনলাইন বিজনেস থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা যায়। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইন বিজনেস অনেকটাই সফল হচ্ছে। তাই ব্যবসায় সফল হতে চাইলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিজনেস এর মার্কেটিং করা প্রয়োজনীয়।
বাংলাদেশী ৫ টি বিশ্বস্ত অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট