spot_img

ডিপ্লোমা কোর্সসমূহ ও ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা বিস্তারিত।

Must read

এসএসসি পাস করার পর অনেকেই ডিপ্লোমা কোর্স করে চাকরি বা ব্যবসা করার পরিকল্পনা করে থাকে। তবে ডিপ্লোমা কোর্সসমূহ ও ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা এবং ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি তথ্য সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা অনেকেরই নেই। অনেকেই এ ব্যাপারে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগে থাকে। তাই আগ্রহীদের দুশ্চিন্তা দূর করতে, ডিপ্লোমা কোর্স সমূহ এবং ডিপ্লোমা কোর্স সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য দেয়া হল এই আর্টিকেলটিতে।

বাংলাদেশের সকল ডিপ্লোমা কোর্সের কার্যক্রম পরিচালিত হয় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (বিটিইব) এর অধীনে। এটি ১৯৬৭ সালের ৭ ই মার্চ “ইস্ট পাকিস্তান এডুকেশন বোর্ড” নামে প্রতিষ্ঠিত যার বর্তমান নাম বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। মূলত দেশের বেকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এবং দেশে দক্ষ মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের ক্ষেত্রে চাহিদার আলোকে শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ৩ মাস, ৬ মাস এবং ৪ বছর মেয়াদী মোট ৩৪ টি শিক্ষা ক্রম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে।

ডিপ্লোমা কোর্সসমূহ:

 ডিপ্লোমা কোর্স সমূহ হলো,

■ ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং

■ ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং

■ ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার

■ ডিপ্লোমা ইন ফিশারিজ

■ ডিপ্লোমা ইন ফরেস্টি

■ ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক

 ডিপ্লোমা ইন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি

■ ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (নেভাল)

■ ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (আর্মি)

■ ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি

■ ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা:

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভর্তি যোগ্যতা:

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হওয়ার জন্য অবশ্যই এস এস সি বা সমমানের অর্থাৎ দাখিল, ভোকেশনাল, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষায় পাশ করতে হবে। তবে সরকারি পলিটেকনিকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং বা যেকোন কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা ছেলেদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম হলো জিপিএ ৩.৫ এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম হলো জিপিএ ২.৫। উল্লেখিত জিপিএ এর অপেক্ষাকৃত কম জিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না।

পাশাপাশি সাধারণ গণিত বা উচ্চতার গণিতে ছাত্রদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম জিপিএ ৩.০ এবং ছাত্রীদের ক্ষেত্রে ২.০ থাকতে হবে এবং বেসরকারিতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তির যোগ্যতা যেকোনো সালে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার উত্তীর্ণের সার্টিফিকেট থাকলেই হবে।

  • ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল-ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তির যোগ্যতা,ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তির যোগ্যতার ক্ষেত্রে প্রার্থীকে অবশ্যই জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে এবং এসএসসি বা সম্মানের পরীক্ষায় যেকোনো শিক্ষাবোর্ড হতে উত্তীর্ণ হতে হবে। এছাড়া ছাত্রদের বেলায় সাধারণ গণিত বা উচ্চতার গণিতে জি পি এ ম ৩.০ এবং সর্বমোট জিপিএ ৩.৫ থাকতে হবে। ছাত্রদের বেলায় সাধারণ গণিত বা উচ্চতার গণিতে জি পি এ নূন্যতম ৩.০ এবং সর্বমোট জিপিএ ৩.৫ থাকতে হবে আর ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতে জি পি এ নূন্যতম ২.০ সহ সর্বমোট জিপিএ ৩.০ থাকতে হবে। আর “ও” লেভেল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে যেকোনো একটি বিষয়ে “সি” গ্রেড এবং গণিতসহ অন্য যেকোনো দুটি বিষয়ে ন্যূনতম “ডি” গ্রেড থাকতে হবে।
  • ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার এ ভর্তি যোগ্যতা হলো,শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত অথবা ‘ও’ লেভেলে যে কোন একটি বিষয়ে ‘সি’ গ্রেড ও অন্য যেকোনো দুইটি বিষয়ে নূন্যতম ‘ডি’ গ্রেড এবং জিপিএ পদ্ধতি চালুর পূর্বে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগে যে কোন সালে উত্তীর্ণ হতে হবে। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি বা সম্মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত অথবা ‘ও’ লেভেলে যে কোন একটি বিষয়ে ‘সি’ গ্রেড ও অন্য যেকোনো দুটি বিষয়ে ন্যূনতম ‘ডি’ গ্রেড এবং জিপিএ পদ্ধতি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন করতে পারবে।
  •  ডিপ্লোমা ইন ফিশারিজ,শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত অথবা ‘ও’ লেভেলে যে কোন একটি বিষয়ে ‘সি’ গ্রেড ও অন্য যেকোনো দুইটি বিষয়ে নূন্যতম ‘ডি’ গ্রেড এবং জিপিএ পদ্ধতি চালুর পূর্বে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগে যে কোন সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে অথবা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি বা সম্মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত অথবা ‘ও’ লেভেলে যে কোন একটি বিষয়ে ‘সি’ গ্রেড ও অন্য যেকোনো দুটি বিষয়ে ন্যূনতম ‘ডি’ গ্রেড এবং জিপিএ পদ্ধতি যেকোনো সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন করতে পারবে।
  • ডিপ্লোমা ইন ফরেস্টি,শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে জিপিএ ২.০ প্রাপ্ত অথবা ‘ও’ লেভেল এবং জিপিএ পদ্ধতি চালুর পূর্বে এসএসসি অথবা সমমান পরীক্ষায় যে কোন সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে বা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি বা সম্মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কমপক্ষে জিপিএ ২.০ প্রাপ্ত অথবা ‘ও’ লেভেল এবং জিপিএ পদ্ধতি চালুর পূর্বে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় যে কোন সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে।
  • ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক,

শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত অথবা ‘ও’ লেভেলে যে কোন একটি বিষয়ে ‘সি’ গ্রেড ও অন্য যেকোনো দুইটি বিষয়ে নূন্যতম ‘ডি’ গ্রেড এবং জিপিএ পদ্ধতি চালুর পূর্বে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগে যে কোন সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে অথবা  বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এসএসসি বা সম্মান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কমপক্ষে জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত অথবা ‘ও’ লেভেলে যে কোন একটি বিষয়ে ‘সি’ গ্রেড ও অন্য যেকোনো দুটি বিষয়ে ন্যূনতম ‘ডি’ গ্রেড এবং জিপিএ পদ্ধতি যেকোনো সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির আবেদন করতে পারবে।  জীববিজ্ঞান বিষয়ে জিপিএ ৩.০ সহ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৩.০ প্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে।

  • ডিপ্লোমা ইন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ভর্তি আবেদনের জন্য এস এস সি বা সমমানের পরীক্ষায় যেকোনো বিভাগে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং নূন্যতম জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত হতে হবে।
  •  ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (নেভাল) এ ভর্তির যোগ্যতা হল এস এস সি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং নূন্যতম জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত হতে হবে।
  •   ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং (আর্মি) এ ভর্তির যোগ্যতা হল এস এস সি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং নূন্যতম জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত হতে হবে।
  •  ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজিতে ভর্তি আবেদনের জন্য এস এস সি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে জীববিজ্ঞান সহ উত্তীর্ণ হতে হবে এবং নূন্যতম জিপিএ ২.৫ প্রাপ্ত হতে হবে।

যে সকল প্রার্থী ও লেভেল বা বিদেশ থেকে পাস করেছেন, তাদের পরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে সমতাকরণ সনদ ও আইডি কোড সংগ্রহ করতে হবে তবে অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে না।বিভাগীয় প্রার্থীরা পূর্বেই পরিচালক  স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা এর কাছ থেকে আইডি কোড সংগ্রহ করবে।

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি তথ্য।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০২৩ ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং সহ সকল শিক্ষা ক্রমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য

www.bteb.gov.bd ও www.btebadmission.gov.bd ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। এছাড়াও এই ওয়েবসাইটের পাশাপাশি ভর্তি বিষয়ক আপডেট খবর জানতে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফেসবুক পেজটি

www.facebook.com/bteb.admin/ ফলো করতে পারেন।

■ সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর তালিকা।

সরকারি পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এর মধ্যে ইনস্টিটিউট এর কোড, ইনস্টিটিউটের নাম ঠিকানা এবং আসন সংখ্যাগুলো হলো,

১. বাংলাদেশ সার্ভে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট(৬৫০৫৬)

২. ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট (৫০১১৭)

৩. চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (৭০০৪৮)

৪. কুমিল্লা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (৬৫০৫৪)

৫. বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (৪২০৪৫)

৬. সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (৬১০১৬)

৭. পাবনা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (২৬০৬২)

৮. বগুড়া ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (২০০৯৯)

৯. রংপুর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (১৬০৫৮)

১০.বাংলাদেশ সুইডেন ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউ (৭২০০৭)

■ ডিপ্লোমা করতে খরচ কত?

সাধারণত সরকারি ইনস্টিটিউটে খরচ, বেসরকারি ইনস্টিটিউটের চাইতে তুলনামূলকভাবে কম হয়ে থাকে। চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স এ ৮টি সেমিস্টার হয় এবং প্রতি সেমিস্টারে সাধারণত ১০,০০০/ থেকে ১২,০০০/ টাকা সব মিলিয়ে খরচ হয়ে থাকে। এই হিসাবে চার বছরের সর্বমোট খরচ ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা হতে পারে।

আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চার বছরে সর্বোচ্চ এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article