বাংলাদেশে দুইটি স্মার্ট সিটি গড়তে খুব শীঘ্রই ১ লাখ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিলেন চীনা কোম্পানি। চীনা কোম্পানিটি এই দুটি মেগা প্রকল্পের জন্য প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা বা প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের বিশাল বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে।
স্মার্ট সিটি প্রকল্পে কেরানীগঞ্জ ও আশুলিয়ায় দুটি উদ্ভাবনী স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে আহ্বান জানিয়েছেন এবং এই বিশাল বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে বেইজিংয়ের প্রকৌশল ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান চায়না রোড এন্ড ব্রিজ করপোরেশন।
সূত্র জানা গেছে যে সিআরবিসির অর্থায়নে ইতিমধ্যে প্রকল্প দুটির সম্ভাব্যতা যাচাই ও এর পরিবেশগত সমীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। তবে তবে বিনিয়োগকারী সংস্থার নিজেই প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও তারা বরাবরই প্রশ্ন তুলেছেন।
বর্তমানে দেশে চীনের অর্থায়নে চলমান প্রকল্পগুলোতে বেশ ধীরগতিতে অর্থ ছাড় করা হচ্ছে।বিগত ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের ২৭টি প্রকল্পের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছিল যার মধ্যে ৮.০৮ বিলিয়ন ডলারের নয়টি প্রকল্পের জন্য ঋণচুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। তবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অর্থ ছাড় করা হয়েছে মাত্র ৪.৪৭ বিলিয়ন ডলার। তাই বিনিয়োগকারী সংস্থার নিজেই প্রকল্পগুলোর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও তারা বরাবরই প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিস্তারিত।
কর্মকর্তারা জানান রাজউকের ঝিলমিল প্রকল্পের কাছে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে অবস্থিত কেরানীগঞ্জ ওয়াটারফ্রন্ট স্মার্ট সিটি প্রকল্পের আয়তন প্রায় ৫ হাজার ১৯ একর হবে
এবং তুরাগ প্রকল্পটি তুরাগ নদীর ক্যাচমেন্ট এলাকায় অবস্থিত, যার আয়তন ৯ হাজার ৫১৯ একর। জানা গেছে, এই প্রকল্প দুটি বাস্তবায়ন করা হবে চার ধাপে।
নিন্ম আয়ের মানুষের জন্য কেরানীগঞ্জের প্রস্তাবিত স্মার্ট সিটিতে ছোট ছোট অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করা হবে এবং অন্যদিকে, তুরাগ প্রকল্পটি মূলত বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
১৫ বছর মেয়াদে কেরানীগঞ্জ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫২ হাজার কোটি টাকা পাশাপাশি ভূমি অধিগ্রহণে ৭ হাজার কোটি টাকা এবং ভূমি উন্নয়নে ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছে।
যেহেতু তুরাগ প্রকল্পটি মূলত বন্যা প্রবাহ অঞ্চল সংরক্ষণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে তাই এর ৬২ শতাংশ এলাকা জলাশয়ের জন্য সংরক্ষিত থাকবে এবং বাকি ৩৮ শতাংশ এলাকা নিয়ে কমপ্যাক্ট টাউনশিপ গড়ে তুলবে রাজউক যার মধ্যে ৮ শতাংশ এলাকায় সবুজায়ন করা হবে। কেরানীগঞ্জ এবং তুরাগ প্রকল্পটির বাকি যে ৩০ শতাংশ থাকবে, সেখানে আবাসিক, বাণিজ্যিক ভবনসহ অন্যান্য বিনোদন সুবিধা সৃষ্টি করা হবে এবং এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার কোটি টাকা।
স্মার্ট সিটি বা শহরের মূল লক্ষ্য হল স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান বাড়ানো। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে স্মার্ট সিটি বা শহরের বেশ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দেশের উন্নয়ন এবং নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর জন্য স্মার্ট সিটি বা শহরের প্রকল্প গ্রহন করার মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব। উপরোক্ত প্রকল্প দুইটি কার্যকর এবং বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের স্মার্ট সিটি এবং ডিজিটালাইজড হতে একধাপ এগিয়ে থাকবে।