বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য বিদেশে চাকরির সুযোগ ৪৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে, যা দেশের বৈদেশিক আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে মাত্র ৫২,৬৭৫ জন কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থান পেয়েছেন, যা গত ৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
হ্রাসের কারণগুলো কী?
১. মধ্যপ্রাচ্যে নিয়োগ হ্রাস: সৌদি আরব, ওমান ও কুয়েতের মতো বড় শ্রমবাজারগুলোতে নিয়োগের গতি কমেছে।
২. নিয়োগপ্রক্রিয়ার জটিলতা: ভিসা সংক্রান্ত দীর্ঘসূত্রিতা ও এজেন্সিগুলোর অনিয়ম প্রভাব ফেলছে।
৩. দক্ষতার ঘাটতি: ভাষাজ্ঞান ও টেকনিক্যাল দক্ষতার অভাবে অনেকেই প্রতিযোগিতায় টিকছেন না।
৪. আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি: বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এর প্রভাব কী?
- রেমিট্যান্স আয় কমতে পারে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ তৈরি করবে।
- প্রবাসী নির্ভর বহু পরিবারের উপার্জন হ্রাস পাবে।
- বেকারত্ব বৃদ্ধি পেতে পারে, বিশেষ করে যেসব পরিবার বিপুল অর্থ ব্যয় করে বিদেশে কর্মসংস্থানের চেষ্টা করছে।
করণীয় কী?
- দক্ষতা উন্নয়ন: প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাড়াতে হবে, বিশেষ করে ভাষা ও পেশাগত দক্ষতায়।
- প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করা: রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
- নতুন শ্রমবাজার খোঁজা: ইউরোপ, পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার নতুন বাজারে প্রবেশের কৌশল নিতে হবে।
- পর্যবেক্ষণ ও পরিকল্পনা: দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রণয়ন করে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
সারসংক্ষেপ
বিদেশে কর্মসংস্থানের এই ধস শুধু অর্থনৈতিক নয়, সামাজিকভাবেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশকে এখনই শ্রমবাজার ব্যবস্থাপনায় সংস্কার ও রূপান্তরের উদ্যোগ নিতে হবে। দক্ষতা উন্নয়ন, স্বচ্ছ নিয়োগব্যবস্থা এবং নতুন গন্তব্য খোঁজার মাধ্যমেই এ সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।
আলোচিত বিষয়সমূহঃ
বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মসংস্থান, বিদেশে চাকরি, রেমিট্যান্স বাংলাদেশ, শ্রমবাজার সংকট, মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি
তথ্যসূত্র: