আয়কর রিটার্ন কি? আয়কর রিটার্ন ফরম এবং ইনকাম ট্যাক্স দেওয়ার নিয়ম

Must read

আয়কর রিটার্ন  হলো করদাতার বার্ষিক আয়, ব্যয় ও সম্পদের তথ্য নির্ধারিত ফরমে উপস্থাপন করা। অর্থাৎ যাদের ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর বা টিআইএন রয়েছে, আয়কর রিটার্ন দাখিল করা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক। 

আয়কর আইন অনুযায়ী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত ফরমে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হয়ে থাকে। সাধারণত বাংলাদেশি কোনো নাগরিকের বাড়িভাড়া, চিকিৎসাভাতা ও যাতায়াত ভাতা বাদ দিয়ে বছরে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি আয় হলেই তাকে আয়কর দিতে হয়।

আয়কর রিটার্নে সরকার, একটি নির্ধারিত ফরমে করদাতা তার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের তথ্য লিখে কর কার্যালয়ে জমা দিয়ে থাকে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের করদাতাদের জন্য এই আলাদা রিটার্ন পত্র জমা দিতে হয়। আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার জন্য যে নির্দিষ্ট কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তার একটি তালিকা তৈরি করে নিলে অনেকাংশের সুবিধাজনক হয়ে থাকে। 

আয়কর রিটার্ন জমায় যেসব কাগজপত্র লাগবে,  টা হল, 

আয়ের বিবরণী

১. বেতন খাতে আয়।(ফটোকপি সংযুক্ত করবেন)

২. গৃহসম্পত্তি খাতে আয়।

ক. গৃহের তলাভিত্তিক ফ্লোর স্পেস ও ভাড়া।(ভাড়ার চুক্তিপত্র)

খ. পৌর করের পরিমাণ। (পৌর কর প্রদানের রসিদ)

গ. বন্ধকি ঋণের ওপর সুদ। (ব্যাংকের ইস্যুকৃত বিবরণী বা সার্টিফিকেট)

ঘ. বাসস্থান খালি থাকলে তার সময়।(উপ-কর কমিশনারকে সার্টিফিকেট)

ঘ. বাসস্থান খালি থাকলে তার সময়।(উপ-কর কমিশনারকে জানানো হলে পত্রের কপি)

৩. কৃষি আয়।

ক. কৃষিজমির পরিমাণ।

খ. ফলনকৃত শস্যের পরিমাণ।

গ. বাজারমূল্য।

৪. ব্যবসা বা পেশা খাতে আয়। (স্থিতিপত্র ও আয়-ব্যয়ের বিবরণী, যদি থাকে)

৫. মূলধনি লাভ।

ক. মূলধনি সম্পদের বিক্রয়মূল্য।(বিক্রীত চুক্তিপত্র ও বিক্রয়ের রসিদ বা দলিল)

খ. বিক্রীত সম্পদের ক্রয়মূল্য। (ক্রয়ের দলিল অথবা প্রমাণপত্র)

গ. আনুষঙ্গিক মূলধনি ব্যয়।(ক্রয় ও আনুষঙ্গিক মূলধনি ব্যয়ের প্রমাণপত্র)

৬. আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয়

লভ্যাংশ।

খ. ব্যাংকের সুদ বা মুনাফা।

গ. সঞ্চয়পত্রের সুদ।

ঘ. এফডিআর বা মেয়াদি স্থায়ী আমানত।

৭. অন্যান্য উৎস খাতে আয়:

*অন্যান্য উৎসের আয়ের সপক্ষে প্রমাণপত্র।

* কর রেয়াতের জন্য বিনিয়োগ।

ক. জীবনবিমার প্রদত্ত কিস্তি। (প্রিমিয়ার রসিদ)

খ. ভবিষ্যতে প্রাপ্য বার্ষিক ভাতা প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে চাঁদা। (উপযুক্ত কর্মকর্তার ইস্যু করা সনদ)

গ. ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ অনুযায়ী প্রযোজ্য ভবিষ্য তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা। (সনদের ফটোকপি)

ঘ. স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলে স্বীয় ও নিয়োগকর্তার প্রদত্ত চাঁদা। (সনদের ফটোকপি)

ঙ. অনুমোদিত বয়সজনিত তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা।(নিয়োগকর্তার সনদ)

চ. অনুমোদিত ঋণপত্র বা ডিবেঞ্চার স্টক, স্টক বা শেয়ারে বিনিয়োগ। (বিনিয়োগের প্রমাণপত্র)

ছ. ডিপোজিট পেনশন স্কিমে প্রদত্ত চাঁদা (ব্যাংকের সনদ সর্বোচ্চ, ১,২০,০০০ টাকা। বিনিয়োেগ অনুমোদনযোগ্য)

জ. কল্যাণ তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা এবং গোষ্ঠী বিমা কর্মসূচির অধীন প্রদত্ত কিস্তি। (নিয়োগকর্তার সনদ)

ঝ. জাকাত তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা।(প্রমাণপত্র)

অন্যান্য, যদি থাকে (বিবরণ দিন ও প্রমাণপত্র)

রিটার্ন তৈরি করে স্বাক্ষর করার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আয়কর রিটার্নের সঙ্গে সংযুক্ত করে রিটার্নসহ কাগজপত্রের ফটোকপি ফাইলে বা রিটার্নে সংরক্ষণ করতে হবে। তাহলে পরবর্তী রিটার্ন তৈরি করা এবং যদি কোনো কারণে আয়কর ফাইল অডিটে নির্বাচিত হয় বা কোনো তদন্ত করা হয়, সে ক্ষেত্রে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করতে সুবিধা হয়।

- Advertisement -spot_img

More articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

Latest article