দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত বড় বিপদের মুখে
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (RMG) ও টেক্সটাইল খাত দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০%-এর যোগান দেয়। এই খাত শুধু অর্থনীতির চালিকাশক্তিই নয়, দেশের প্রায় ৪০ লক্ষ শ্রমিকের জীবিকার অন্যতম প্রধান উৎস। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাস সংকট এ শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন তুলেছে।
কী হচ্ছে মাঠপর্যায়ে?
ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম-এর অসংখ্য কারখানায় গ্যাসের চাপ এতটাই কম যে, মেশিন চালানোই দায় হয়ে উঠেছে। যার ফলে:
১. উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে
২. সময়মতো পণ্য সরবরাহ করা যাচ্ছে না
৩. শ্রমিকদের বাধ্য হয়ে ছুটি দেওয়া হচ্ছে
৪. বিদেশি ক্রেতারা আস্থা হারাচ্ছেন
বিপদে কত টাকার বিনিয়োগ?
পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে বর্তমানে প্রায় ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৭,৭০,০০০ কোটি টাকা সমমূল্যের বিনিয়োগ রয়েছে, যার বড় একটি অংশ ঝুঁকির মুখে।
এই বিনিয়োগগুলো মূলত:
- নতুন কারখানা স্থাপন
- প্রযুক্তি আপগ্রেড
- উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হওয়ার কথা ছিল
কিন্তু বর্তমান গ্যাস সংকটের কারণে উদ্যোক্তারা পরিকল্পনা স্থগিত করতে বাধ্য হচ্ছেন।
অর্থনীতির জন্য কী বার্তা দিচ্ছে এই সংকট?
১. রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে
২. শ্রমিক ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা বাড়ছে
৩. বাজেট ঘাটতি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ
৪. বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হচ্ছে
কী করা দরকার এখনই?
- দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি কৌশল নির্ধারণ
- কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার দেওয়া
- বিকল্প জ্বালানি উৎসে বিনিয়োগ (যেমন: এলপিজি, সোলার)
- ব্যবসায়ী সংগঠন ও সরকারের যৌথ উদ্যোগ
শেষ কথা
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প শুধু দেশের গর্ব নয় — অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল ভিত্তি। এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল লক্ষ লক্ষ মানুষ, হাজার হাজার ব্যবসা এবং পুরো রপ্তানি খাত। তাই গ্যাস সংকটকে শুধু একটি শিল্পের সমস্যা হিসেবে না দেখে, এটি জাতীয় অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয় হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
এখনই সময় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের। নইলে আমরা শুধু আয় হারাব না — হারাব আমাদের আন্তর্জাতিক সুনাম এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনাও।
আলোচিত বিষয়সমূহঃ
- গ্যাস সংকট বাংলাদেশ
- পোশাক শিল্পে বিনিয়োগ ঝুঁকি
- টেক্সটাইল খাতে সমস্যা
- তৈরি পোশাক শিল্প ২০২৫
- গার্মেন্টস গ্যাস সমস্যা
- Bangladesh RMG crisis
সূত্র (Reference):
১. The Daily Star: Investment at stake as gas crisis chokes textile, RMG factories
২. BGMEA ও BTMA – বিভিন্ন প্রেস বিজ্ঞপ্তি (২০২৫)