বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে টানা পাঁচ সপ্তাহের পতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। ২০২৫ সালের মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তার সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে গত চার বছরের মধ্যে।
টানা পতনের পরিসংখ্যান
ডিএসইএক্স সূচক এ সপ্তাহে প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে। আজকের বাজারে মোট ৩৮৫টি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে, যখন মাত্র ৯টি কোম্পানি দরবৃদ্ধি করেছে। পুঁজিবাজারে এমন পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
কেন এমন পতন?
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এই পতনের পেছনে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ:
- অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা: মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট এবং বৈশ্বিক বাজারে অস্থিরতার প্রভাব পড়ছে আমাদের বাজারেও।
- গভর্নেন্স ও নিয়ন্ত্রণের অভাব: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কার্যকর ভূমিকার অভাব এবং সুশাসনের ঘাটতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করছে।
- প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিরবতা: বড় বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ না থাকায় বাজারে তারল্যের সংকট দেখা দিচ্ছে।
বিনিয়োগকারীদের দাবি
বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীরা বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, বাজারের এই ধ্বস রোধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, বরং দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
সামনের দিনগুলোতে করণীয় কী?
বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে হলে প্রয়োজন:
- স্বচ্ছ ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ কাঠামো
- প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা
- জনসচেতনতা ও বিনিয়োগ শিক্ষা
- কার্যকর অর্থনৈতিক নীতিমালা ও প্রণোদনা প্যাকেজ
এছাড়া, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বাজার কাঠামো ও তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা আনাও জরুরি।
সারসংক্ষেপ
বাংলাদেশের শেয়ারবাজার বর্তমানে এক গভীর চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এখনই।
আলোচিত বিষয়সমূহঃ
- শেয়ারবাজারে পতন
- বাংলাদেশ শেয়ারবাজার
- ডিএসই
- বিনিয়োগকারীর উদ্বেগ
- বিএসইসি
- বাজার বিশ্লেষণ
তথ্যসূত্র: